Wednesday, July 31, 2013

- ২০. প্রেম ও না-প্রেম: ছ।। বহুমুখী প্রেম

 
- ২০. প্রেম ও না-প্রেম: ।। বহুমুখী প্রেম 

 

অনেক নায়ক-নায়িকাই ছিলো যারা পুরো কলেজ জীবনে একাধিক জনের সাথে মন নিয়ে লুকোচুরি খেলেছে অন্ততঃ আমাদের সময়ও লুকোচুরিটা মূলতঃ মনের সাথেই হতো। তবে কেউ কেউ ছিলো যারা বিশ্বাস করতো শরীর ছাড়া প্রেম হয় না। যাই হোক প্রেম শারীরিক না অশরীরী তা এই কাহিনীর উপলক্ষ্য নয়। কাহিনীর বক্তব্য ফ্রয়েডের মতে, সব মানুষের মধ্যেই বহুগামী স্বভাব আছে। অনেকের ক্ষেত্রে সেটার প্রকাশ ঘটে, অনেকের ক্ষেত্রে সুযোগ আসে না বা প্রকাশ পায় না।

 

যাই হোক না কেন, কলেজের অনেক নায়িকার নায়ক হতো প্রথমবর্ষে সুভাষ, দ্বিতীয়বর্ষে হেমন্ত, তৃতীয়বর্ষে শরৎ আর চতুর্থবর্ষে বসন্ত। এর মধ্যে অনেকে আবার কলেজের সিনিয়র বা সহপাঠী ছাড়াও কিছুদিন ল্যাজে খেলাতো আশেপাশের ব্যাতাইতলা বা নস্করপাড়ার কোনো রোমিওকে। ছেলেরাও যে একদম সেই "প্রথমত আমি তোমাকে চাই" থেকে "শেষ পর্যন্ত্য আমি তোমাকে চাই" রয়ে যেত তা নয়। তবে বিক্কলেজে মেয়েদের বড়ই অভাব, তাই এই অভাবের জন্যে আমাদের স্বভাবটা অনেকটা ঠিক থাকতো।

 

তবে অনেকে ছিলো একদম 'মেড ফর ইচ আদার' র‍্যাগিং পিরিয়ডে যাকে মন দিয়েছে তাকেই শেষ পর্যন্ত্য বিয়ে করে দম্পতি। লোকের ঘরে নাক গলিয়ে সুখী না অসুখী সেটা জানা আমার কম্ম নয়তবে একসাথে এক ছাদের তলায় আছে বিভিন্ন ক্রিয়া, বিক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া সাথে নিয়ে সেটাই বড় কথা। কেউ কেউ হয়তো একসাথে শুরু করে বিভিন্ন কারণে বৈবাহিক সম্বন্ধ ছিন্ন করেছে কিছু পথ চলার পরে।

 

কলেজ জীবনে কাউকে প্রেম করতে শুনলে আমরা জানতে চাইতাম, হ্যাঁরে ওকি তোর উড বি ওয়াইফ না কুড বি ওয়াইফ। মানে দুধ জমে ক্ষীর হবার সম্ভবনা কতটা? না উপরে একটু হালকা সর পরলেও ক্ষীর জমার সুযোগ কম। উড বি ওয়াইফ (would be wife) মানে প্রেমটা নেমে গেছে। ছেলে মেয়ে দুজনেই রাজী। দুজনের বাড়ি থেকেও মেনে নিয়েছে। বা না নিলেও নিজেরাই বিয়ে করে নেবে সেরকম দম আছে। আর কুড বি ওয়াইফ (could be wife) মানে এর মধ্যে যেকোনো একটা বাদ আছে আর সেটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

 

একবার আমার এক আমেরিকা প্রবাসী বন্ধু আমাদের এক সহপাঠীর ফোন পেয়ে আমার কাছে জানতে চায়, "হ্যাঁরে ভানুর তো ফোন পেলাম, আমাকে বলছে এয়ারপোর্ট যেতে। কিন্তূ লজ্জার খাতিরে জানতে পারলাম না ওকি একা আসছে না পরিবার সহ।" আমি হতবাক এর মধ্যে লজ্জার কি আছে! তারপর খেয়াল হলো যে ভানুর ভাবী বধু (would be wife) লাভলী আমাদেরই সহপাঠিনী ছিলো। কলেজ জীবনের প্রথমবর্ষে আমরা জানতাম লাভলী ছিলো আমাদের সহপাঠী ও একই শহরের ছেলে মেঘনাদের বিশেষ বান্ধবী। মাঝে মাঝে বকুলতলায় দুজনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যেত।

 

মেয়েদের আওয়াজ দেওয়া সব সময়ই বিপদজনক। তাই লাভলীকে না পারলেও এই নিয়ে আমরা মেঘনাদের পিছনে লাগতাম। যারা মেঘনাদকে আওয়াজ দিতাম তাদের মধ্যে ছিলো একজন ছিল রসময় কিছুদিন পর থেকে দেখতে পেলাম লাভলীকে, নেতাজী ভবনের স্টেডিয়ামে বা এল স্কোয়ারের দিকে রসময়ের সাথে। জানলাম লাভলীকে নাকি মেঘনাদ একদিন দুঃখ করে বলেছিল রসময়ের কথা। বড়লোকের ছেলে, পড়াশোনায় ভালো জেনে লাভলী মেঘনাদকে ছেড়ে তারপর থেকে রসময়ের সম্ভবতঃ বউ (could be wife)

 

শেষ বছরে আবার দলবদল। রসময়ের কপালে তখনও চাকরীর শিঁকে ছেঁড়েনি। কিন্তূ ওদের আরেক বন্ধু ভানু - সেও বেশ বড়লোকের ছেলে বেশ লোভনীয় একটা চাকরী জুটিয়ে ফেলেছে। আস্তে আস্তে দেখা গেল কলেজ ছাড়ার আগে লাভলী রসময়কে ছেড়ে ভানুর ঘাটে গিয়ে নাও ভেড়ালো। এতএব স্ট্যাটিসটিকস্ আর প্রোবাবিলিটির জটিল গণনা করেও বলা মুস্কিল ভানু কি বিবাহিত? বিবাহিত হলে কি লাভলীর সাথেই? তবে পরে জেনেছিলাম নির্দিষ্ট দিনে আগমন দ্বার দিয়ে ভানুর পাশে হেঁটে আসতে দেখা গিয়েছিলো লাভলীকেই।

 

এছাড়াও অনেক ধরনের অভিব্যক্তি ছিলো। যেমন - ব্যাথা, ফ্রাস্টু ইত্যাদি। 'ব্যাথা' মানে ভালোলাগা জন্মেছে, কিন্তূ ভালবাসা কিনা বুঝতে দেরী আছে। 'ফ্রাস্টু' মানে অন্ততঃ একপক্ষ মন দিয়ে ফেলেছে। একতরফা মন দেওয়া জনগনের অবস্থা অনেকটা সেই দাঁড়কাক গোষ্ঠীর মত দাঁড়াত। কেউ 'ফ্রাস্টু' খেয়ে ক্লাস মায়া করে ঘুমাতো আর ভাবতো। কেউ আবার বেশীদিন এই রোগের প্রকোপে দুয়েকটা বিষয়ে সাপ্লিমেন্টারি পেত। কেউ মদ বা গাঁজা নিয়ে বেঁচে থাকতো। কেউ বা উপরের কাহিনীর মেঘনাদের মতো দিনে দুটো নাইট্রো গ্রুপের ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেশা করতো। আমার এক সহপাঠী ছিল যে আমাদের এক সহপাঠিনীকে দেখে তন্ময় হয়ে তাকিয়ে থাকতো। জানতে চাইলে বলতো, বিশ্বাস করবি না তোরা, কিন্তূ আমি ওর দিকে তাকালেই দেখতে পাই শকুন্তলা কলসী কাঁখে জল নিয়ে আসছে। তারপর সেই কলসীর জল নিয়ে আমাদের সহপাঠী দুষ্ম্যন্তর বাকি কল্পনাটা না লেখাই ভালো।

 

দুষ্ম্যন্তর এই মনোভাবটা সেই শকুন্তলাও বন্ধুবান্ধবীদের মাধ্যমে ভালোই জানতো এবং ব্যাপারটা বেশ উপভোগও করতো। অনেক মেয়ের মতো আমাদের এই শকুন্তলাও কুকুর দেখলে বেশ ভয় পেতো। একদিন আমদের ফ্লুইড মেকানিক্স ল্যাবের পর শকুন্তলা একটা ঘেয়ো কুকুরের পাশ দিয়ে অবলীলাক্রমে চলে এলো। তখনও ওখানে একটা ছোটো মাঠ ছিলো, যেটাকে আমরা বলতাম বেবী লর্ডস - এখন যেখানে কলেজের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি। আমরা গ্রুপের বাকি ছেলে মেয়েরা জানতে চাইলাম কি হলো, তুই এতো সাহসিনী হয়ে গেলি যে কুকুর দেখলে ভয় পাস না? শকুন্তলা আঁতকে উঠে বললো, "কোথায় কুকুর! ওমা আমি তো খেয়ালই করিনি" আমরা বেশ হাসাহাসি করলাম।

 

এর কিছুদিন পর আমাদের সেই সহপাঠী দুষ্ম্যন্ত - শকুন্তলার কাছে হিরো হবার জন্যে, সন্ধ্যের দিকে বকুলতলায় বসে থাকা একটা কুকুরের পাশ কাটিয়ে এসে বললো, "দেখলি কুকুরটা আমাকে কিছু করলো না। ওদের বিরক্ত না করলে ওরাও মানুষের কোনো ক্ষতি করেনা। কোনো ভয় নেই আমার সাথে চল কুকুরটার পাশ দিয়ে। দেখ তোর ভয় কেটে যাবে।" শকুন্তলা ভয়ের চোটে মুখ ফস্কে বলে ফেলছিলো, "দেখ কুকুরটা অন্ধকারে মনে হয় তোকে বুঝতে পারেনি। কিন্তূ আমি তোর পুর্কি খেয়ে কোনো ঝুঁকি নেবো না।" আমরা একটু পরে কথাটার মানে বুঝতে পেরে প্রচুর মজা করেছিলাম। কারণ আমাদের এই দুষ্ম্যন্ত ছিলো একটু কৃষ্ণবর্ণ। দুষ্ম্যন্তও এই অপমানে তারপর থেকে আর শকুন্তলার কলসী কাঁখে জল আনার দৃশ্য দেখতে পায়নি।

 

এর কিছুদিন পরে জানা গেলো দুষ্ম্যন্ত বাড়ির কাছেই এক ললনার প্রেমে পড়েছে। কিন্তূ দুষ্ম্যন্তর কথায়, "মেয়ের বাপ আর আমার মধ্যে একটা ইগোর লড়াই আছে। মেয়ের উপড় কার অধিকার বেশী সেটা নিয়ে।" কিছুদিন পরে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে, আমরা হোস্টেলেও মশারী খাটিয়ে শুতাম কিছুদিন। 'খাটিয়ে শুতাম' বলাটা হয়তো অনৃতভাষণ হয়ে গেল। আসলে আমরা কাজ সংক্ষেপ করার জন্যে বা দুর্জনের কথামত ল্যাদ খেয়ে দেরী করে উঠার জন্যে সকালে মশারী তোলার সময় পেতাম না। তাই প্রতি রাতে মাসের শুরুতে খাটানো মশারীর মধ্যে ঢুকে পড়তামহঠাৎ জানা গেল, দুষ্ম্যন্তর ম্যালেরিয়া হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ পরে ফিরে আসার পর জানতে পারলাম এ'কদিনে তার শরীর ও মন দুই ভেঙ্গেছে।

 

সেই প্রতিবেশিনীর সাথে বাড়ি ফিরে প্রেম করার বা একটু গল্প করার অনেক বাঁধা ছিলো। একে বাড়ির লোকের কাছে ধরা পরার ভয়, তারপর পাড়ার লোক দেখে ফেলার ভয়। এদিকে সেই প্রতিবেশিনীও আমাদের দুষ্ম্যন্তকে বুঝিয়েছিলো তার মনে অন্য কেউ না থাকলেও শনি রবি বাড়ি থেকে বার হওয়া অসম্ভব। উপায়ান্তর না দেখে দুষ্ম্যন্ত প্রতিবেশিনী বালিকার একতলার কোয়ার্টারের পিছনে একটা ঝোপের মধ্যে ঢুকে একটা পায়খানার ট্যাঙ্কের উপড় দাঁড়িয়ে প্রেমালাপ চালাতো। এই দুঃসাহসিক কাজের ফল ম্যালেরিয়া। ম্যালেরিয়ায় কাবু হয়ে দুষ্ম্যন্ত গৃহবন্দী। একদিন ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার সময় দেখতে পায়, সেই প্রতিবেশিনী এক যুবার সাথে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় বাড়ির কাছেই এক পার্কে বসে প্রেমালাপ করছে। প্রেম অন্ধ, তাই একটু চোখ ফুটতে, পাড়ার বন্ধুদের কাছে জানতে পারে প্রতিবেশিনীর সাথে সেই যুবকের দীর্ঘ প্রনয়ের কাহিনী।

 

কিন্তূ সবাই তো আর আঠারো বার ঘায়েল হয়েও হল ছাড়ে না। এই দুষ্ম্যন্ত তারপরেও চাকুরী জীবনেও দেখেছি বহু মহিলার প্রেমে পড়তে এবং কিছুদিন পরে আবার ভেসে উঠতে। যদিও প্রতক্ষ্যদর্শীদের মতে, সেইসব মহিলারা যে তার প্রেমে পড়েছে এই দূর্বোধ্য ইঙ্গিতগুলো নাকি দুষ্ম্যন্তই বুঝতে পাড়ত। অন্য কেউ, এমনকি সেইসব মহিলারাও নাকি সেটা টের পেত না! কিছুদিন পরে সেই মহিলা চাকরী ছেড়ে চলে গেলে বা কাউকে বিয়ে করে ফেললে, বুঝতে পারতো আগের ইঙ্গিতগুলো নাকি ভুল ছিলোএবং অবিলম্বে নতুন কারো কাছ থেকে নতুন কোনো ইঙ্গিত পেতে শুরু করে দিতো। আর তা নাহলে মাঝের সময়টা একটু মনমরা হয়ে থাকতো বা হিমালয়ে চলে গিয়ে সন্ন্যাসী হয়ে যাবার কথা ভাবতো। একবার তো এক মানস প্রিয়ার বিয়ের খবর শুনে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলো। ঘুমের ওষুধ পায় নি বলে গোটা কয়েক ক্যালপল ট্যাবলেট খেয়ে! এরপর থেকে নাকি ওর অফিসে কারো সত্যি সত্যি জ্বর এলেও বারংবার পরীক্ষা করে একটা করে ক্যালপল দেওয়া হতো! অবশেষে সাম্প্রতিক সংবাদ অনুসারে চিরপ্রেমিক দুষ্ম্যন্তও ঘর বেঁধেছে।

 

আপাততঃ প্রেমের আখ্যান বন্ধ করি আর একটি ঘটনা দিয়ে। কলেজ থেকে পাশ করার পর অনেক ছেলে কিছুদিন থেকে যেত কোনো বন্ধু বা জুনিয়ারের সাথে হোস্টেল বা হলের কোনো ঘরে। অনেকে চেনা পরিবেশ ছাড়বে না বলে ঘর ভাড়া নিত ব্যাতাইতলা বা নস্করপাড়া বা কোলে মার্কেট বা গোডাউন গেটের আশেপাশে। বাড়িওয়ালাদের কাছে কদর ছিলো এইসব অবিবাহিত সদ্য চাকরী পাওয়া ছেলেদের। কারণ এরা সপ্তাহান্তে বাড়ি আর সপ্তাহের কাজের দিনগুলো অফিসেই কাটায়। তাই এদের জন্য জল বা আলোর খরচ কম। ভাড়াটাও মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই পাওয়া যায়। তবে এদের জন্যে বরাদ্দ হতো নিচেরতলার ঘরগুলো। কারণ উপরেরতলাগুলোতে ভাড়া থাকতো বিবাহিত দম্পতিরাবাড়িওয়ালাদের কিছু স্থায়ী শর্ত থাকতো। যেমন মাল খাওয়া যাবে না (পড়ুন, খেলেও হল্লা করা যাবে না), নিকটাত্মীয় ছাড়া কোনো মহিলা আনা যাবে না (পড়ুন, কোনো মেয়ে এলে তাকে নিকটাত্মীয় হিসেবে পরিচয় দিতে হবে আর প্রতিবেশীদের অসুবিধে করে কোনো বেলেল্লাপনা চলবে না) ইত্যাদি। আর অনেক বাড়িওয়ালা বা প্রতিবেশীরা নিজেদের অবিবাহিত মেয়েদের জন্যে ইঞ্জিনিয়ার জামাই যোগার করার জন্যে মাঝে মাঝে ছিপ ফেলতো।

 

এই রকম এক আস্তানায় কলেজ থেকে পাশ করা কয়েকটি ছেলে ভাড়া থাকতো। তাদের পাশ করে বছর তিনেক হয়েছে। কাজের দরকারে মাঝে মাঝে দেশে বা বিদেশে বিভিন্ন জায়গায় কয়েকদিন বা কয়েকসপ্তাহ বা কয়েকমাসের জন্যে যেতে হয়। সুধীর নামে এক বন্ধু কিছুদিন বিদেশে থেকে সদ্য ফেরৎ এসেছে। তার অফিসে ফ্লেক্সিবল টাইমিং, মানে আগে গিয়ে আগে বা পরে গিয়ে পরে আসা যায়। মাঝে মাঝেই দেখা যায় সে বেশ গম্ভীর কেতায় তাড়াতাড়ি উঠে বেরিয়ে যায় এবং যথারীতি বিকেল বিকেল ফিরে আসে। একদিন আস্তানার আরেক সদস্যও একটু তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে জানা গেল, সুধীরের ডুবে ডুবে জল খাবার কথা। তখন কলেজের চতুর্থবর্ষে পাঠরতা বৃষ্টি নামের এক ছাত্রীর সাথে তার প্রেম জমে উঠেছে। বিকেলে ফিরে এসে ফাঁকা ঘরে কম্পিউটার শেখানোর নাম করে নিয়ে আসতো। এটা তো অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। কিন্তূ তার জন্যে বাকিদের উন্নাসিক আচরণ করার কোনো মানে হয় না। যাইহোক সামনা সামনি পরে গিয়ে সুধীর প্রেমিকার সাথে অন্য সদস্যের পরিচয় করিয়ে দিল। কিছুদিন পরে হঠাৎ সুধীরের উদ্বিগ্ন ফোন বাকিদের কাছে। জানা গেলো সেই সপ্তাহেই সে বাড়ি বদল করছে। এক গভীর রাতে বাবা মাকে নিয়ে এসে অনান্য সদস্যদের সহায়তা কাকভোরে আস্তানা ছেড়ে চলে যাবার পরেই কিছু স্থানীয় লোকজন এসে হাজির। তার মধ্যে একজন নাকি বৃষ্টির স্থানীয় বর। ব্যাপারটা একটু বুঝে উঠতে সময় লাগলো অন্যদের।

 

জানা গেলো এ মেয়ে যে সে মেয়ে নয়। কলেজে পড়তে আসার আগে বাঁকুড়া বা বীরভূমে নিজের শহরে উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময় বৃষ্টির বিয়ে হয় এক স্কুল শিক্ষকের সাথে। কলেজে পড়তে আসার পর তার সঙ্গে সম্পর্ক ফিকে হয়ে আসে এবং কোনরকম আইনী বিচ্ছেদ না করেই বাড়ির অমতে বিয়ে করে ফেলে ব্যাতাইতলার কাছে এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীকে। শেষে চতুর্থ বছরে সব কিছু গোপন রেখে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে সুধীরের সাথে। শাক দিয়ে তো আর মাছ ঢাকা যায় না। একদিন খবর পেয়ে সেই ব্যবসায়ী লোকজন নিয়ে সেই আস্তানায় এসে সুধীরকে চমকে যায়। তারপর বৃষ্টির খোঁজে কলেজ গিয়ে দেখে সে পান্ডিয়াতে নেই। তখন বৃষ্টির দেশের বাড়িতে লোক পাঠিয়ে জানতে পারে প্রথম বিয়ের কথা। যাইহোক প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়ায় সুধীর আর তার পুরোনো আস্তানার সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করেনি, তাই পুরো ঘটনা জানা যায় নি। তবে বৃষ্টির কাহিনী যেটুকু জানা গিয়েছিলো সেটা ছেলেদের মনে মেয়েদের উপড় অবিশ্বাস জন্মানোর পক্ষে যথেষ্ট।

 

বিধিসন্মত সতর্কীকরণ: সব চরিত্র কাল্পনিক!

No comments:

Post a Comment

Note: Only a member of this blog may post a comment.