Tuesday, April 2, 2013

২. হসপিটাল ও ডাক্তারবাবু


- . হসপিটাল ও ডাক্তারবাবু


র একটা জিনিস আর জিনিয়াসের সাথে কলেজে এসে পরিচয় হয়েছিল, সেটা হলো একটা হসপিটাল আর তার এক ডাক্তারবাবু। অবস্থানটা বেশ বিটকেল ছিল। হসপিটাল-এর একদিকে Wolfenden Hall - মুরগীদের কাছে ভয়ঙ্কর ত্রাস; অন্য দিকে Pandiya Hall - একমাত্র ছাত্রীনিবাস আর সামনে সেই বিখ্যাত Boxing Ring - যেখানে অনেক সম্পর্কের শুরু বা শেষ। এর অদুরেই Graveyard, প্রাচীন অনেক সাহেব আর মেমের সমাধিস্থল। যখন আমরা ভর্তি হবার জন্যে এসেছিলাম, কলেজে টাকা পয়সা জমা দেবার পর, সবার মেডিকেল টেস্ট হত। তখন সবাইকে একবার যেতে হত। তারপর রাগিং পিরিয়ড-এও টুকটাক দরকারে বা প্রয়োজনে সিনিয়রদের হাত ধরে অনেকে গেছে শুনেছি। আর একটা দরকারে অনেকে যেত, সেটা হলো কোনো Semester বা Mid Semester পরীক্ষার সময় পক্স বা জন্ডিস নিয়ে অনেকে ভর্তি হত। তবে সেটা সবসময় আসল রোগ না হলেও হত। অনেকে কোনো পেপার ২-৩ বারের চেষ্টাতেও উতরাতে না পারলে, এই পথ অবলম্বন করত। হসপিটালে ভর্তি হবার জন্যে কাঠখড় পোড়াতে হত না।

কারণ ডাক্তারবাবুর প্রতিভা। হসপিটালে বেশ কিছু রঙিন বড়ি থাকত - সাদা, লাল, কমলা, সবুজ ইত্যাদি। বিভিন্ন রোগের জন্যে বিভিন্ন রঙের বড়ি। তবে অনেক সময় সভয়ে লক্ষ্য করেছি, দুটো ভিন্ন রোগের জন্যে দুই ভিন্ন রোগীর বড়ির রং একই। তাই হসপিটালে ভর্তি হলেও অনেকে বাইরের  ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ নিত। তাতে  হসপিটালের কোনো অসুবিধে ছিল না। এমনও হয়েছে, একবার কারো মাথা ফেটে যাবার পর নিয়ে যেতে, হসপিটালের ডাক্তারবাবু বলেছেন, "ইস্, অনেকটা কেটে গেছে। তাড়াতাড়ি কোনো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও।" 

তাই তেমন দায়ে পড়লে হসপিটালে গিয়ে কি হচ্ছে না বলে এটা বললেই হত, "ডাক্তারবাবু, মনে হচ্ছে জন্ডিস হয়েছে।" অবধারিত প্রশ্ন আসতো "তাহলে কোনো ভালো ডাক্তার দেখাও বা বাড়ি চলে যাও"। যখন শুনতেন পরীক্ষা আছে তখন একটা বেড লিখে দিয়ে বলতেন দিনে তিনবার লালবড়ি, দুবার সাদাবড়ি নিতে আর বাইরে থেকে একটু রক্ত ইত্যাদি পরীক্ষা করে আনতে। আরও যেটা বলতেন সেটা হলো আসার সময় পারলে একটা ডাক্তার দেখিয়ে একটু মতামতটা জেনে নিতে! দেখিয়ে এলে সেই ওষুধগুলোই নিজের প্রেসক্রিপশনে লিখে দিতেন। আমাদেরও আপত্তি ছিল না, কারণ সেরকম কিছু হলে কেউ এই হসপিটাল আর তার ডাক্তারের উপর ভরসা করতাম না। কারণ সেরকম কিছু হলে সেখানে নাকি লোকে ঢুকত Vertical অবস্থায়, কিন্তু বেরোতো Horizontal হয়ে। না মানে একদম শেষ হয়ে নয়, স্ট্রেচারে শুয়ে পিজি বা নীলরতনের অ্যাম্বুলেন্সে উঠার জন্যে।

No comments:

Post a Comment

Note: Only a member of this blog may post a comment.