- ১৪. নয় নয় করে হোস্টেল নয়ে
বাকি পর্বগুলো পড়তে হলে দেখুন http://parthapratimroy.blogspot.in/
আবার ফিরে আসি স্মৃতিচারণে। অবশেষে ডিরেক্টরের চাপের কাছে হেরে গিয়ে আমরা ১৫নং-এর ৩০৭নং রুম ছেড়ে যাত্রা করলাম মুচিপাড়ার দিকে। আগেই বলেছি আমার প্রথম বছরের রুমমেট সন্দীপ মণ্ডল আর একজন অন্য রুমের বাসিন্দা সমিত রায়চৌধুরীর সাথে, গিয়ে উঠলাম ৯নং হোস্টেলের ২০৫নং রুমে। যথারীতি প্রত্যাশিত হিসাবেই একটু বা বেশ খারাপ রুমগুলোর মধ্যে একটা। পনেরো নম্বরে তবু ছিলো কাঠের দুপাল্লার দরজা। কিন্তূ নতুন হোস্টেলে দুপাল্লার দরজা পুরোটাই কাঁচের এবং প্রায় সবগুলো কাঁচই ভাঙ্গা। লজ্জানিবারনের প্রশ্ন না থাকলেও, হাওয়া আটকানোর দরকার ছিলো। এতএব কাঁচের প্যানেলগুলোতে মোটা আর্টপেপার বা ৪-৫ পরতে খবরের কাগজ সেঁটে কাজ চালানো হতো। তাতেও একবার একটা মুস্কিল হয়েছিলো। একটা প্যানেলের কাগজ কেউ খেলাচ্ছলে বা হাওয়ার বেগে ছিঁড়ে গিয়েছিলো। আর দরজার পাশেই রাখা ছিলো একটা ইলেকট্রিক হিটার। দরজায় তালা মারা থাকলেও, এক সপ্তাহান্তে কেউ দেশলাই না পেয়ে, সেই ছিঁড়ে যাওয়া জায়গা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে হিটারটা জ্বেলে একটা বিড়ি ধরিয়েছিলো। প্রায় ধরে আসার সময় তার হাতে হিটারের গরম ছেঁকা লাগায় চকিতে হাত বার করতে গিয়ে প্যানেলে লেগে অনৈচ্ছিক প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় বিড়ি গিয়ে পড়েছিল দরজার সামনে থাকা সন্দীপ মন্ডলের বিছানায়। বিড়ির অংশটা নেভার আগে তোষকটা পুড়িয়ে দিয়েছিলো। স্টিলের খাট থাকার জন্যে সেবার আগুন বেশী ছড়াতে পারেনি। কিন্তূ সে এক বিড়ম্বনা, বাড়িতে সত্যি বললেও সন্দেহ করবে। ভাববে যে ছেলে নিজেই মদের নেশায় সিগারেট বা গাঁজার কল্কেতে টান দিতে গিয়ে ছড়িয়েছে আর বন্ধুদের নাম চালাচ্ছে। তাই অজ্ঞাত পরিচয় অপরাধীর উর্ধ্বতন কয়েকপুরুষের নামে অভিসম্পাত করতে করতে হাতখরচের পয়সা বাঁচিয়ে কোলে মার্কেটে নতুন তোষক করানো ছাড়া উপায় ছিলো না।
বঙ্গসন্তানদের একটা বদনাম যে সংখ্যা বেশী হলেই নিজেদের মধ্যে অনেকগুলো দল বা উপদল তৈরী করে ফেলবে। ১৫ নম্বর থেকে আমরা যারা এসেছিলাম তারা একটা গোষ্ঠী হয়ে গেলাম। আমরা তিনজন ছাড়াও পাখি বা কল্যাণ গাঁতাইত, রণজয় বা মৃত, দ্যুতিমান হাজরা, সুনীল সাহু ইত্যাদি। আমাদের কয়েকজন আর আশপাশের হোস্টেল থেকে যোগ দেওয়া দুয়েকজন একসাথে বিকেল বেলায় কলেজ থেকে ফিরে সেকেন্ড গেট দিয়ে কোলে মার্কেট গিয়ে একটা দোকানে ছেঁড়া পরোটা আর আলু দিয়ে ছোলার ডাল সাঁটিয়ে, একটা গোল্ড প্রিমিয়াম বা চারমিনার ধরিয়ে হাঁটা দিতাম গেস্টকিনের গেটের দিকে অথবা ঢুকে পড়তাম বোটানিক্যাল গার্ডেনে। মাসের শেষ দিকে সিগেরেটের বদলে হাতে থাকতো পাতি বিড়ি। গঙ্গার পাড়ে বসে সোনালী স্বপ্ন বা নীল ফ্রাস্টুর গল্প বা অন্য কোনো সাধারণ গল্পে সন্ধ্যে হয়ে গেলে ফিরে আসতাম নিজের রুমে। শীতের দিকে সেকেন্ড হাফে ক্লাস না থাকলেও মধ্যাহ্নভোজনের পরেই মিঠে রোদ গায়ে মেখে চলে যেতাম বি গার্ডেনের মধ্যে। কোনোদিন তিন নম্বর গেট দিয়ে চলে যেতাম ফেরিঘাটে। তখন বোটানিক্যাল গার্ডেনে ঢোকার কোনো টিকিট লাগতো না আর গঙ্গার পারে কোনো রেলিং ও লাগানো হয়নি। তাছাড়া কলেজের তিন নম্বর গেটটাও সারারাত খোলা থাকতো। তাই রাত বাড়লেই বি গার্ডেন বা কলেজের পেছন দিকটা খুব একটা নিরাপদ থাকতো না।
একবার মনে আছে এক বিভৎস দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছিলাম আমরা কজন। বি গার্ডেন-এ ঢুকলেই ডানদিকে একটা রাস্তা চলে গেছে। বিকেলবেলায় সবসময় চিল, শকুন উড়ে বেড়াতো ঊঁচু গাছগুলোর মাথায়। সেদিন শীতের দুপুরেই চিল শকুনের ভিড় একটু বেশীই ছিলো। ঢুকেই দেখি অনেক লোকজন, বাগানের গার্ডদের ভিড় এবং কয়েকগাড়ী পুলিশ। এগিয়ে যেতে হলো না, ওদিকে তাকাতেই চোখে পড়লো সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য। যা জানা গেলো আগেররাতে গার্ডেনের ভিতর দিকে স্মাগলারদের একটা মজলিশ বসেছিলো। এটা প্রায় রোজকার ঘটনা। এরা আসতো কোলকাতার দিকে গার্ডেনরিচ, মেটিয়াবুরুজ বা হাওড়ার দিকে পোদরা, চুনাভাটি বা আশেপাশের এলাকা থেকে। সেদিনের মজলিশে হাজির ছিলো কোনো এক স্থানীয় নর্তকী। খাওয়া-দাওয়া, ফুর্তির পর কোনো কারনে তাকে খুন করা হয়। দুদিকের দুটো ঊঁচু ঊঁচু গাছ থেকে দড়ি বেঁধে প্রায় ১০-১২ ফুট উচ্চতায় ঝোলানো ছিলো প্রায় অর্ধনগ্ন দেহটা। বুক, পিঠ ফালা ফালা করে কেউ চাকু দিয়ে দাগ করে পরনের কাপড়টা দিয়ে কোনোমতে ঢেকে দিয়েছে। তার একটা চোখ ধারালো কিছু দিয়ে উপড়ানো, জমাট বেঁধে এসেছে মোটা রক্তের ধারা। আর অন্য চোখটাও নেই, একটা গুলি চলে গেছে চোখের কোটর ভেদ করে মাথার পিছন দিক দিয়ে।
বলা বাহুল্য কেউ ফিরে এসে বা কেউ আসার পথেই হড়হড় করে উগড়ে দিয়েছিলাম দুপুরের খাওয়া ভাত। ঘুমোতে গেলেই কয়েকদিন ফিরে আসতো সেই দৃশ্য। এরপর বি গার্ডেনে ঘুরতে যাওয়া সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। বি ই কলেজেও জনশ্রুতি আছে এরকম একটা ঘটনার, যার সুবাদে ক্লক টাওয়ারের দীঘির নাম পাল্টে লোকমুখে হয়েছে 'বিদিশা ঝিল'। এই নিয়ে অনেক গল্প চালু থাকলেও যতদুর জানা যায়, বিদিশা নামের কোনো এক ছাত্রী লঞ্চে গঙ্গা পেরিয়ে তিন নম্বর গেট দিয়ে আসতে গিয়ে কিছু স্থানীয় স্মাগলারদের দেখে ফেলে তাদের কাজের সময়। ধরা পরার ভয়ে এবং বিদিশার মুখ বন্ধ করতে তারা তাকে খুন করে ফেলে দেয় ওই ক্লক টাওয়ারের ঝিলে। তারপর থেকে যার নাম হয়ে যায় 'বিদিশা ঝিল'।
……………….
নয় নম্বর হোস্টেলে একটা উল্লেখযোগ্য জিনিস ছিলো সেটা হলো একটাকার মুদ্রা ফেলে ফোন করার যন্ত্র। শোনা যায় আরো কয়েকটা হল বা হোস্টেলে থাকলেও আস্তে আস্তে সবগুলোই বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। কারণটা ছিলো খুবই সামান্য - আমরা কয়েন বা মুদ্রা না ফেলে একটা ঝাঁটার কাঠি ঢুকিয়ে ফোন করতাম। তাই তারবিভাগের কর্মচারীরা এসে দেখতো এই নাম্বার থেকে অনেক ফোন হলেও, ভাঁড়ার একদম শুন্য। একবার নাকি তারা ফোনের বাক্স খুলে দুটো মুদ্রা পেয়েছিলো। কোনো এক ভালোমানুষ ছাত্র সঠিকপথেই যন্ত্রটা ব্যবহার করেছিলো। আমাদের গর্ব করার একটা সুযোগ এসেছিলো - তারবিভাগে নয় নম্বর হোস্টেলের নামে কিছু আদায় হয়েছে ভেবে। কিন্তূ এক মেস কর্মচারী এসে বলেছিলো ওই দুই 'অসাধু' কর্মচারী নাকি আমাদের গর্ব করার দুর্লভ সুযোগটাও কেড়ে নিয়েছিলো। সেকেন্ড গেটের বাইরে দুটো সিগেরেট কিনে টান দিতে দিতে বলেছিলো, সাহেবরা তো জানেই হোস্টেলের ছেলেগুলো পয়সা না দিয়ে ঝাঁটার কাঠি ঢুকিয়ে ফোন করে। তাই এই দুটাকা নিয়ে কি করবো, চল একটা করে সিগেরেট ফুঁকতে ফুঁকতে বাড়ি যাই। এতএব এরপর আমরা কেউ নিজেরা সাধু হয়ে, তারবিভাগের কর্মচারীদের অসাধু হবার সুযোগ দিই নাই।
তবে এখান থেকে তখন শুধু কলকাতা বা হাওড়ার মধ্যেই ফোন করা যেতো। কেউ কেউ বাড়িতে ফোন করতো, তবে খুব কম। কারন ফোনের সময় আবহসঙ্গীত হিসেবে বাকিদের আলোচনার যেসব চোখা চোখা শব্দগুলো ভেসে আসতো সেটা বাড়ির লোকজনের পক্ষে হজম করা মুস্কিল। আর যদি কেউ বোনকে ফোন করছি বলে তার প্রেমিকাকে ফোন করতো তাহলে তো কথাই নেই। জনগনের বাওআলিতে মান এবং মেজাজ দুটোরই হানি ঘটতো। মেজাজ হারালেও চাপ, রটনাটা ঘটনা হয়ে সারা হোস্টেলে আর কলেজে ছড়িয়ে যেতো। মাঝে মাঝে কেউ এসে ১০১ ডায়াল করে পুলিশ স্টেশনে জানতে চাইতো, "দাদা দেশলাই আছে" বা "আচ্ছা দাদা আজ ব্যাতাইতলার মোড়ে যে পুলিশটা ট্রাকওয়ালার কাছ থেকে দুটাকা ঘুষ নিলো, তার নাম কি?" একবার কে রাতে মদ আর গাঁজার নেশায় প্রচুর চিৎকার করায় জনগণ তাকে প্রচুর গালাগাল দেয়। মনের দুঃখে সে দমকলে ফোন করেছিলো। বলেছিলো "দাদা, তাড়াতাড়ি আসুন আগুন লেগে গেছে"। ওদিক থেকে কোথায় জানতে চাওয়ায় উত্তর পেয়েছিলো, "আমার ঝাঁটে, বোকা-দাদা"।
……………….
আগের হোস্টেল থেকেই আমাদের অভ্যাস ছিলো দরকারে বা অদরকারে কার্নিশ দিয়ে একরুম থেকে অন্যরুমে যাওয়া। কেউ রাতে রুমে একা থাকলে কার্নিশ দিয়ে তার জানলার নিচে গিয়ে খান কয়েক ধুপ জ্বালিয়ে দুহাতে ভাগ করে নিয়ে, আস্তে আস্তে ঘোড়ানো হতো আর নাক মুখ দিয়ে অদ্ভুত আওয়াজ করা হতো। এই কান্ড করতে গিয়ে শেষটা অনেকসময় মধুর হতো না। হয়তো যাকে ভয় দেখাতে যাওয়া হলো সে বুঝতে পেরে চুপিচুপি উঠে এসে নাটের গুরুদের গায়ে শীতের রাতে একমগ জল ঢেলে দিলো। আবার অনেকে হয়তো এতেই ভয় পেয়ে অজ্ঞান। শেষে ভয় দেখাতে এসে প্রাথমিক চিকিৎসায় লেগে পড়তে হতো।
প্রচলিত যে 'তেনারা' নাকি এমনিতে কিছু না করলেও, কেউ যদি 'তেনাদের' নিয়ে মজা করে তাহলে নাকি প্রতিশোধ নেয়। বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে এসবে পাত্তা দিতাম না। অবশেষে বন্ধুদের বেশ কয়েকবার ভয় দেখিয়ে, এখানে আসার পর প্রথম পড়েছিলাম ভুতের খপ্পরে। কোনোরকমে প্রাণ নিয়ে ফিরতে পেরেছিলাম। একদিন বেশ রাত করে ঝর্ণা থেকে একটা নাইট শো দেখে ফিরছি। একটা থার্ড ক্লাস ভৌতিক সিনেমা ছিলো আর তার সাথে কিছু থার্ড ক্লাস 'পাঞ্চ'। আমি আর সন্দীপ হোস্টেলে খাবার পাব না হিসেব করে শ্যামদার দোকানে রাতের খাবারটা সেরে একটা করে সিগেরেট ধরিয়ে ঢুকে পড়লাম ফার্স্ট গেট দিয়ে। বেন্ডিং মোমেন্ট গেট পেরিয়ে ডানদিকে ঘুরে বিবেকানন্দের মূর্তিটা পেরিয়েই ছিলো ক্লক টাওয়ার। আটতলা বাড়ি বা ওদিকে যাবার জন্যে মাঝের রাস্তাটা তখন ছিলো না। কালিপুজো হয়ে গেছে, শীত একটু একটু পড়ছে। তাই কলেজ চত্বরে হালকা কুঁয়াশার আস্তরনের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ কার যেন পায়ের আওয়াজ আমাদের পিছনে। একটা অপার্থিব অনুভুতিতে আমরা দুজন দাঁড়িয়ে পড়লাম।
পিছনে কেউ নেই কিন্তূ একটা খরখর শব্দ। উঁচু গাছের পাতার মধ্যে দিয়ে ঝিরঝিরিয়ে বয়ে চলেছে ঠান্ডা বাতাস। সরসর করে কিছু একটা চলে যাচ্ছে পায়ের কাছ দিয়ে। সভয়ে চারদিকে চাইলাম। একবার ভাবলাম পিছনদিকে যাব কিনা, কিন্তূ হঠাৎ যেন মনে পড়ে গেলো আরে ডানদিকে কবরখানা আর বামদিকে বিদিশা ঝিল। বুঝতে বাকি রইলো না হয় কবরখানার কোনো সাহেব ভুত বা বিদিশা ঝিলের পেত্নী আমাদের পিছু নিয়েছে। তাই রাম রাম জপতে জপতে এগিয়ে চললাম আস্তেআস্তে। বুঝতে পারছি কেউ পিছনে আসছে। আমরা জোরে হাঁটলেই সেও জোরে আসছে। আবার আমরা আস্তেআস্তে এগুলে সেই শব্দও আস্তে হয়ে যাচ্ছে। শুনেছিলাম শুকনো পাতায় পায়ের চাপে এমন আওয়াজ হয়, কিন্তূ কই তেমন তো কিছু নেই। উল্ফের বারান্দায় কেউ নেই, দু-চারটি ঘরে আলো জ্বলছে। অন্ধকার রাস্তায় শুধু অল্প চাঁদের আলো। দুজনে দুজনকে ধরে এগিয়ে চলেছি ওভালকে বামদিকে রেখে। ডানদিকে পুরোনো কেমিকাল ল্যাবরেটরিটার ভাঙ্গা বাড়িটা পেড়লেই নয় নম্বর হোস্টেল। প্রায় চলে এসেছি, হঠাৎ সামনে তাকিয়ে বুক হিম হয়ে গেলো।
কেমিকাল ল্যাবরেটরিটার ঠিক পাশেই কেউ একজন মাথায় ঘোমটা দিয়ে দাঁড়িয়ে আর মাথা নাড়িয়ে আমাদের ডাকছে। দাঁড়িয়ে গেলাম, গলা শুকিয়ে কাঠ। আমাদের দাঁড়িয়ে যেতে দেখে সেও চুপ করে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। কতো সেকেন্ড, মিনিট পেরিয়ে গেল কে জানে। হয়তো শেষে অধৈর্য্য হয়ে আবার ঘোমটা ঢাকা মাথা নেড়ে আমাদের ডাকলো। হাত-পা সিঁটিয়ে এলো, মনে হলো এর থেকে ঢের ভালো ছিলো প্রথম দিকে সিনিয়ারদের হোস্টেলের উপরতলা থেকে সেই ভয়ঙ্কর 'আয়, আয়' ডাক। হঠাৎ এইসবের মধ্যে যেন কোনো একটা ঘন্টার শব্দ দূর থেকে ভেসে এলো। মনে হলো যেন একশ বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া চ্যাপেল বা গির্জাঘর থেকে ভেসে আসছে সেই শব্দ। এতো অসম্ভব। বুঝতে পারলাম শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে। এবার সেই পেত্নী এসে আমাদের ঘাড় মটকাবে।
তখনই মুখে এসে পড়লো একটা টর্চের আলো। ডিরেক্টরের বাড়ির দিক থেকে, জিমখানার পাশ দিয়ে ঘন্টি বাজিয়ে সাইকেল নিয়ে এসে উদয় হলো কলেজের এক গার্ড। আমাদের ওই রকম ভুতের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এদিক ওদিক আলো ঘোরাতেই চোখে পড়লো ল্যাবরেটরিটার পাশে গাছের ডালে আটকে ঝুলতে থাকা সেই জিনিসটা। কারো একটা সাদা জামা, যেটা হাওয়ায় বেগে দূলছিলো। হোস্টেলে ফিরে এসে আবিস্কার করি 'খরখর' শব্দের উৎস। বাইরে পিচ রাস্তার কাজ হচ্ছিলো সেই রাতে। আমাদের চটিতে কয়েকটা ছোটো পাথরের টুকরো আটকে গিয়েছিলো আর তৈরী করেছিলো সেই শব্দ।
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.