Thursday, February 20, 2014

ক্যাওরামি - IIEST

ক্যাওরামি

+++++++

 

কলেজ স্যোশালে একটা ক্যাওরামি হতো যেটাকে বলা হতো ক্যাও ক্যুইজ। এখনো কি ক্যাও ক্যুইজ হয়? তাহলে একটা প্রশ্ন হতে পারতো ভারতের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিদ্যার্থীরা অহংবোধে ভোগে? ভারতে একমাত্র আমি আমি করার জায়গা কোথায়? মানে আত্মমুগ্ধতা বা নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ানোর জায়গা।

 

উত্তর হল - আমাদের সেই বিক্কলেজ। কারন সেটা এখন আই আই ই এস টি IIESTআই আই (II) মানে আমি আমি আর (EST) কারন এটা পূর্ব ভারতে।

 

এটা নিয়ে "IIEST, Shibpur" নামে একটা আড্ডার আসরে পৃথ্বীরাজ নাগ নামের এক ছোকরা ('১৩ কম্পু) দাবী করলো "IIEST, Shibpur" না হয়ে "IIEST Shibpur" হলে অসুবিধে কোথায়? আমাদের নামের মাঝে একটা কমা কি কমানো গেল না!

 

সবাই হায় হায় করে উঠলো। ল্যামিবাবু ('৯৭ খনি) দাবী তুললেন অবিলম্বে কমাটা কমানো হোক। সন্তোষদাও ('৬৫ বাস্তু) যোগ করলেন দেখে মনে হয় যেন কোমা থেকে ফিরে এলো। কেউ বলল - কমাটা কেমন যেন কমার্শিয়াল লাগে শুনতে। আমি বেগতিক দেখে বললাম - কমা নিয়ে এই আলোচনায় কি তাহলে দাঁড়ি দেওয়া ভালো? কিন্তু দাঁড়িয়ে যাওয়া কি আর এতো সহজ?

 

ভগবানের চোখ - দেবাঞ্জন ('৯৭ বাস্তু) অনুতাপ করে বলল - 'বেসু'টা বেশী দিন টিকলো না ল্যামি। ল্যামি কারন দর্শাল - 'বেসু'টা আসলে 'বেসু'রো লাগছিল শুনতে। তাই পাল্টে ফেলা হল। এইফাঁকে আমি নাপিতের কাজ করলাম। মানে ঝট করে 'কমা'টা কামিয়ে ফেললাম। তাহাতে জনগণ আহ্লাদিত হয়ে আমাকে কমা কামানো বা কমানোর জন্যে এ যাত্রা ক্ষমা করে দিল।

 

তবে তর্ক বেঁধে গেল কমা গেল কোথায়? সন্তোষদা 'নাম নিয়ে টানাটানি' দেখে কোন সন্তোষজনক মন্তব্য না করে কেটে পড়লেন। মাঝখানে বি ই কলেজে সামন্তরাজের অন্যতম মানসদা ('৮১ বাস্তু) সরস মন্তব্য করলেন -  এ তোরা করছিস কি? এতো মনে হচ্ছে ইয়ার্ডে গিয়ে জেনারেল কামরায় সিট বুকিং-এর কেস।  শেষে আমি স্বীকার করলাম কমা আমি কমিয়েছি, মানে চাপা দিয়েছি। তাই বাঁশ বাগানের শিয়াল রাজার মতো, আমি হলাম কমা-আন্ডার - কম্যান্ডার।

 

তবু একটু বাকবিতণ্ডা হল ল্যামিবাবুর সাথে। আমি বললাম - 'কমা' আমি কামিয়েছি। ল্যামির দাবী তোর কমা কি দাঁড়ির মতো, যে কামাবি। আমি বললাম - দাঁড়ি কি গোঁফ যে আমার তোমার করছ। আর দাঁড়ি কামানো গেলে, কমা কামানো যাবে না কেন? আশঙ্কা প্রকাশ করলাম দাঁড়ি কামালে যদি আড়ি করে দাও! ল্যামি ঠোঁট বেকিয়ে কাকেশ্বর কুচকুচের মতো ব্যাঙ্গ করে বললো আমার ভারী বয়েই গেছে।

 

যাইহোক না কেন আমাদের উপলব্ধি করলাম - BEC-টা তবু বেশ (BEC) কিছুদিন চলেছিল।  BEC তো বেশ ছিলই, মাঝখানে আবার 'বেশ বেশ' হয়েছিল। বেসদু (BECDU) মানে BEC দু (২) - মানে বেশ বেশ। যেখান থেকে আমাদের বেকার (BECA-র) জীবনের শুরু।

 

বিক্কলেজ এখন IIEST হয়েছে শুনে বেশ গর্ববোধ হচ্ছে তাই না। IIEST - আমি আমি ইএসটি। UIEST (Universal Institute of Engineering, Science and Technology) হলে কি খারাপ হতো? তাহলে ইউ আই মিলে তুমি আমি, মানে হাম তুম, মানে আমরা হতাম। তা নয় শুধু আমি আমি। পূর্বে এত অহংবোধ ছিল না। BEশেষতঃ, আমরা যখন BECA-র যুবক ছিলাম।

 

কিন্তু ভাল করে দাঁড়িয়ে যাবার আগেই যাবতীয় মস্তিতে দাঁড়ি পড়ে গেল। এবার সবাই আমি আমি করবে। মাঝের কমাটা তবু কমা উচিৎ। ওটা ছিল বলেই (GEC, Shibpur / CEC, Shibpur / BEC, Shibpur / BECDU, Shibpur / BESU, Shibpur) আমাদের কমার্সের দুর্বলতাটা আর কমানো গেল না। সার্টিফিকেটে একটা কমা ছিল তাই তো জীবন ক্ষমা করল না।

 

তবে আমি আমি ইএসটি হলে শুনছি হয়তো মানসিকতার আমুল পরিবর্তন হবে। কি আশ্চর্য - কেন্দ্রে পরিবর্তন হলে সেটাও নাকি আমুল হবে - মানে আমুলের রাজ্য গুজরাট থেকে হবে। আর আমাদের বিক্কলেজও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হলে মানসিকতার আমুল পরিবর্তন। সেই ছাত্র, সেই শিক্ষক, সেই প্রাক্তনি, সেই ক্যাম্পাস - তবুও। আরও কিছুদিন মিনিবাসের কন্ডাক্টর হেঁকে যাবে বিক্কলেজ বিক্কলেজ।

 

আচ্ছা এই 'আমি আমি' করা কে ইংরাজিতে কি বলে? নার্সিসিজম। মানে সেই হিটলারের যেটা ছিল? তাই বুঝি ওনার দলের নাম ন্যাৎসি ছিল? কিন্তু লোকটার ভাবনাচিন্তাগুলো ভুলভাল হলেও হিট করেছিল। তাই আমাদের আড্ডাটা ভুলভাল হলেও IIEST Shibpur হিট করুক সুপার ডুপার হিট।  

No comments:

Post a Comment

Note: Only a member of this blog may post a comment.